খনার বচন
জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী নারীর যিনি বচন রচনার জন্যেই বেশি সমাদৃত, মূলত খনার ভবিষ্যতবাণীগুলোই খনার বচন নামে বহুল পরিচিত। মনে করা হয় ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তার আবির্ভাব হয়েছিল। কিংবদন্তি অনুসারে তিনি বাস করতেন পশ্চিমবঙ্গের অধুনা উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসাতের দেউলিয়া গ্রামে। একদিন পিতা বরাহ এবং পুত্র মিহির আকাশের তারা গণনায় সমস্যায় পরলে, খনা এ সমস্যার সমাধান দিয়ে রাজা বিক্রমাদিত্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। গণনা করে খনার দেওয়া পূর্বাভাস রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হতো বলে রাজা বিক্রমাদিত্য খনাকে দশম রত্ন হিসেবে আখ্যা দেন। খনার বচন মূলত কৃষিতত্ত্বভিত্তিক ছড়া। আনুমানিক ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যে রচিত। তবে এ নিয়ে মতভেদ আছে। অজস্র খনার বচন যুগ যুগান্তর ধরে গ্রাম বাংলার জন জীবনের সাথে মিশে আছে। এই রচনা গুলো চার ভাগে বিভক্ত। • কৃষিকাজের প্রথা ও কুসংস্কার। • কৃষিকাজ ফলিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞান। • আবহাওয়া জ্ঞান। • শস্যের যত্ন সম্পর্কিত উপদেশ।
“ চালায় চালায় কুমুড় পাতা
“ দাতার নারিকেল, বখিলের বাঁশ
“ সোমে ও বুধে না দিও হাত
“ শুনরে বাপু চাষার বেটা
“ পারেনা ল ফালাইতে
“ সূর্যের চেয়ে বালি গরম!!
“ হোলা গোশশা অইলে বাশশা,
“ মেয়ে নষ্ট ঘাটে,
“ যদি থাকে বন্ধুরে মন
“ কাল ধানের ধলা পিঠা,
“ পরের বাড়ির পিঠা
“ ঘরের কোনে মরিচ গাছ
“ সোল বোয়ালের পোনা,
“ ছায়া ভালো ছাতার তল,
“ যা করিবে বান্দা তা-ই পাইবে।
“ তেলা মাথায় ঢালো তেল,
“ চৈত্রে চালিতা,
“ মিললে মেলা।
“ সাত পুরুষে কুমাড়ের ঝি,
“ না পাইয়া পাইছে ধন;
“ কাচায় না নোয়ালে বাশ,
“ যুগরে খাইছে ভূতে
“ দশে মিলে করি কাজ
“ যাও পাখি বলো তারে
“ ফুল তুলিয়া রুমাল দিলাম যতন করি রাখিও।
“ একে তে নাচুনী বুড়ি,
“ চোরের মার বড় গলা
“ ভাই বড়ো ধন, রক্তের বাঁধন
“ জ্যৈষ্ঠে শুকো আষাঢ়ে ধারা।
“ যদি হয় সুজন
“ হাতিরও পিছলে পাও।
“ গাঙ দেখলে মুত আসে
“ ক্ষেত আর পুত।
“ গরু ছাগলের মুখে বিষ।
“ আকাশে কোদালীর বাউ।
“ যদি ঝরে কাত্তি।
“ আষাঢ়ের পানি।
“ গাঁ গড়ানে ঘন পা।
“ যে চাষা খায় পেট ভরে।
“ গরুর পিঠে তুললে হাত।
“ দিন থাকতে বাঁধে আল।
“ মেঘ করে রাত্রে হয় জল।
“ যদি থাকে টাকা করবার গোঁ।
“ খনা বলে শুন কৃষকগণ হাল লয়ে মাঠে বেরুবে যখন
“ ভরা হতে শুন্য ভাল যদি ভরতে যায়,
“ কি করো শ্বশুর লেখা জোখা,
“ বার বছরে ফলে তাল,
“ এক পুরুষে রোপে তাল,
“ নিত্যি নিত্যি ফল খাও,
“ চৈত্রেতে থর থর
“ সাত হাতে, তিন বিঘাতে
“ দিনের মেঘে ধান,
“ চৈতে গিমা তিতা, বৈশাখে নালিতা মিঠা,
“ তিন নাড়ায় সুপারী সোনা,
“ আম লাগাই জাম লাগাই
“ তাল, তেঁতুল, কুল
“ ঘোল, কুল, কলা
“ আম নিম জামের ডালে
“ সকল গাছ কাটিকুটি
“ শাল সত্তর, আসন আশি
“ পূর্ণিমা আমাবস্যায় যে ধরে হাল, তার দুঃখ হয় চিরকাল।
“ ভাদরের চারি আশ্বিনের চারি,
“ মাঘে মুখী, ফাল্গুনে চুখি,
“ সরিষা বনে কলাই মুগ,
“ গোবর দিয়া কর যতন,
“ তিনশ ষাট ঝাড় কলা রুয়ে
“ বৎসরের প্রথম ঈশানে বয়,
“ শুনরে বেটা চাষার পো, বৈশাখ জ্যৈষ্ঠে হলুদ রো।
“ বাড়ীর কাছে ধান পা,
“ তপ্ত অম্ল ঠাণ্ডা দুধ
“ ডাক দিয়ে বলে মিহিরের স্ত্রী, শোন পতির পিতা,
“ পৌষের কুয়া বৈশাখের ফল।
“ ঘন সরিষা বিরল তিল।
জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী নারীর যিনি বচন রচনার জন্যেই বেশি সমাদৃত, মূলত খনার ভবিষ্যতবাণীগুলোই খনার বচন নামে বহুল পরিচিত। মনে করা হয় ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তার আবির্ভাব হয়েছিল। কিংবদন্তি অনুসারে তিনি বাস করতেন পশ্চিমবঙ্গের অধুনা উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসাতের দেউলিয়া গ্রামে। একদিন পিতা বরাহ এবং পুত্র মিহির আকাশের তারা গণনায় সমস্যায় পরলে, খনা এ সমস্যার সমাধান দিয়ে রাজা বিক্রমাদিত্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। গণনা করে খনার দেওয়া পূর্বাভাস রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হতো বলে রাজা বিক্রমাদিত্য খনাকে দশম রত্ন হিসেবে আখ্যা দেন। খনার বচন মূলত কৃষিতত্ত্বভিত্তিক ছড়া। আনুমানিক ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যে রচিত। তবে এ নিয়ে মতভেদ আছে। অজস্র খনার বচন যুগ যুগান্তর ধরে গ্রাম বাংলার জন জীবনের সাথে মিশে আছে। এই রচনা গুলো চার ভাগে বিভক্ত। • কৃষিকাজের প্রথা ও কুসংস্কার। • কৃষিকাজ ফলিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞান। • আবহাওয়া জ্ঞান। • শস্যের যত্ন সম্পর্কিত উপদেশ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন